সোমবার, ২০ মে ২০২৪

ডাকাতি করতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪

প্রথম পাতা » আড়াইহাজার » ডাকাতি করতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪
সোমবার, ২০ মে ২০২৪



ডাকাতি করতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারে একটি বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আড়াই হাজারসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১১। সোমবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. আব্দুল্লাহ (২৪) ও তার সহযোগী মো. মতিন (৩৫), চাঁন মিয়া (২৮) ও মো. আয়নাল (২৫)।

অভিযানে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইলসহ একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, একটি শাবল, একটি দা, দুটি রামদা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা দলবেঁধে ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাবের কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র, এ চক্রের মূলহোতা আব্দুল্লাহ। চক্রে ১০/১২ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে তারা ১/২ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল। তারা গত ১৫ মে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগীর বাড়িতে যায়। সে সময় গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ ও মতিন জানালা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে।

এসময় ভুক্তভোগী ও তার মায়ের ঘুম ভেঙে গেলে তারা ভয়ে চিৎকার করেন। পরে গ্রেপ্তাররা তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখেন। পরবর্তীতে আসামিরা ঘরের দরজা খুলে দিলে গ্রেপ্তার চাঁন মিয়া ও আয়নালসহ অন্যান্য সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্রসহ ঘরে প্রবেশ করে। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভুক্তভোগীর মাসহ ঘরে উপস্থিত সবার হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, পরবর্তীতে গ্রেপ্তাররা ঘরের ভেতর মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ক্ষোভে ভুক্তভোগীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে গ্রেপ্তাররা ভুক্তভোগীর মুখ ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। এই ঘটনা কাউকে জানালে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ভুক্তভোগীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রেখে তারা পালিয়ে যায়।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে ভুক্তভোগী এ ঘটনায় মামলা দায়ের করলে গ্রেপ্তাররা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। পরে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‌্যাব। জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কমান্ডার আরাফাত বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ ডাকাত চক্রের মূলহোতা। তিনি আগে একটি স্পিনিং মিলে চাকরির সময় ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে ডাকাত চক্রটি গড়ে তোলেন। তিনি ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জের ভূলতা-গাউসিয়া এলাকার বাসের হেলপার ও রিকশা চালাতেন।

তিনি বলেন, মতিন আব্দুল্লাহর অন্যতম সহযোগী। তিনি ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে সিএনজি চালাতেন। সিএনজি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির জন্য টার্গেট নির্ধারণ করে ডাকাতির পরিকল্পনা গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহকে প্রদান করতেন। এছাড়াও তিনি তার সিএনজি দিয়ে ডাকাতির আগে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ডাকাতির জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যেতেন এবং ডাকাতি শেষে চক্রের সদস্যদের সুবিধাজনক স্থানে দ্রুত পৌঁছে দিতেন। তার বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার চাঁন মিয়া ও আয়নাল ডাকাত চক্রের অন্যতম সদস্য। তারা ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বাস ও সিএনজি চালাতেন। তারা গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতেন। গ্রেফতার চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় কারাভোগও করেছেন। গ্রেপ্তার আয়নলের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪৫:০৩   ১৮১ বার পঠিত