সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির এজলাস আধুনিকায়ন করে উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ বিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এজলাস আধুনিকায়নের নাম ফলক উদ্বোধন করেন। এ সময় মোনাজাত পরিচালনা করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষের নানান মাত্রায় সংস্কারসহ আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষে পুনরায় বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা উপলক্ষে আজ বিকালে আপিল বিভাগের ১ নং কক্ষে (প্রধান বিচারপতির এজলাস) একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিগণের সমন্বয়ে গঠিত একটি “আনুষ্ঠানিক বেঞ্চে” এ বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
অধিবেশনে দেয়া বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বাংলাদেশের আদালত ব্যবস্থার বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরেন। নতুন এই এজলাস কক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও সমকালীন কাঠামোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির এই এজলাস কক্ষে আমাদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং এই ভবনের আদি শিল্পকর্ম জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এই ভবনের পূর্ব দিকে অবস্থিত বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত যে নান্দনিক নকশাকর্ম সুদীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনন্য স্মারক হিসেবে আমাদের জনস্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। তার সাথে সাদৃশ্য রেখেই এই কক্ষের চার পাশের দেয়ালের নকশা করা হয়েছে। একই সাথে তথ্য প্রযুক্তির সাথে সবচাইতে আধুনিক অনুষঙ্গগুলো এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করতে এ আদালত এখন সম্পূর্ণ সক্ষম।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই আমি বিচার বিভাগের জন্য একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছলাম। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ঢাকার অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচারকবৃন্দ, এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের বিজ্ঞ আইন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আইনজীবীগণের সাথে মতবিনিময় করেছি। নানান উদ্যোগে সেই পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বিচার বিভাগীয় পরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে দেশের আদালতগুলোর ভৌত অবকাঠামোর সংস্কার, সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন। আজ বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত তথা প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ সু-সজ্জিত হয়ে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি এই আয়োজন নতুন দিনের সুচনা মাত্র। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অধস্তন আদালতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন নতুন করে প্রাণ পাবে।
তিনি বাংলাদেশের অধস্তন আদালতে সকল স্থাপনাগুলোর আধুনিকায়ন এবং উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুবিবেচনা এবং সু-দৃষ্টি কামনা করেন। এজলাস কক্ষ আধুনিকায়নে সম্পৃক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
অধিবেশনে এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন স্বাগত বক্তৃতা করেন।
বিশেষ অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে উভয় বিভাগের বিচারপতির অংশগ্রহণে ‘আনুষ্ঠানিক বেঞ্চ’ বসে। এ সময় প্রধান বিচারপতির বিচার কক্ষে পাঁচজন সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, সিনিয়র আইনজীবী, বিপুল সংখ্যক আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট রেজিষ্ট্রির কর্মকর্তারা, বিপুল সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচজন সাবেক বিচারপতি হলেন- বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল আমিন, বিচারপতি মো.তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সুসজ্জিত বিচার কক্ষ উদ্বোধন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ক্যামেরাসহ গণমাধ্যম কর্মীরা প্রবেশ করার সুযোগ পান। তবে নিউজ ছাড়া স্থির চিত্র ও ভিডিও অন্য মাধ্যমে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৭:৫৯ ৭৫ বার পঠিত