শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট
শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪



জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে স্থায়ী দুটিসহ মোট ২০টি পশুর হাটে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা জমে উঠেছে। ক্রেতারা পশুর দাম কিছুটা বেশি বললেও তা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। আজ শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানী দুই সিটিতে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে পশুর হাট বসেছে। চলবে ১৭ জুন অর্থাৎ ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই ঈদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তাই সবাই সুবিধামতো সময়ে হাট ঘুরে নিয়ে নিচ্ছেন পছন্দের পশুটি।

উত্তরার দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গায় বসেছে বড় দুটি পশুর হাট। এই পশুর হাটগুলোতে রয়েছে পর্যাপ্ত গরু, ছাগল, ভেড়া। শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। গতকাল পর্যন্ত পশুর দাম একটু কম থাকলেও আজ দাম কিছুটা চড়া। তবে বিক্রেতারা বলছেন, দাম এখনো সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

শনিবার উত্তরার গরুর হাট সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বিভিন্ন জাতের ছোট, মাঝারি ও বড় জাতের অসংখ্য গরু উঠেছে। অধিকাংশ ক্রেতাই স্থানীয়ভাবে খামারে লালন-পালন করা দেশি গরু পছন্দ করছেন। অনেকে আবার মনে করছেন শেষ দিনে দাম কিছুটা কমে যাবে। তখন তারা সস্তায় কোরবানির পশু কিনবেন। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই আজ পশু কিনবেন বলে জানান।

গরু নিয়ে উত্তরার হাটে আসা গরু ব্যবসায়ী মোস্তফা মাতাব্বর, রাসেল ও রফিক বলেন, এ বছর পশুর হাটে ভারতীয় গরু নেই বললেই চলে। হাটে যেসব ক্রেতা আসছেন তারা দেশি গরু এবং খামারে লালন-পালন করা গরুই বেশি পছন্দ করছেন। তবে বাজারে বড় গরুর কমতি না থাকলেও ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি।

গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, এখন ছোট গরু বিক্রি হচ্ছে বেশি। এছাড়া বাজারে প্রচুর ছাগলও উঠেছে। বেচাকেনাও বেশ জমে উঠেছে। ছোট খাসির দাম ১০-১৫ হাজার টাকা। মাঝারি খাসি ২০-২৫ হাজার এবং বড় জাতের খাসি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেরাদিয়া হাটেও পর্যাপ্ত পশু এসেছে। হাটের নির্ধারিত স্থান ছাড়াও আশপাশের অলিগলিতে রাখা হচ্ছে গরু-ছাগল। এই হাটে গরু কিনতে এসে মিজানুর রহমান নামে এক ক্রেতা জানান, এবার হাটে প্রচুর কোরবানির পশু এসেছে। ছোট, বড়, মাঝারি সব প্রজাতির গরু, ছাগল এসেছে, দামও অন্য বছরের তুলনায় একটু কম।

গাবতলী পশুর হাটে ভারতের রাজস্থান থেকে আনা উট তোলা হয়েছে। তা দেখতে ভিড় করছে দর্শনার্থী ও ইউটিউবাররা। মো. মাহফুজুর রহমান অপু দুটি উট এক মাস আগে কিনেছেন। এরপর সড়কপথে উট দুটি বাংলাদেশে আনা হয়। তিনি জানান, প্রতি উটে ১৪-১৫ মণ মাংস হবে। রাজস্থান থেকে দুটি উট নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কোরবানির সময় বিক্রি করা। আমরা দুটি উটের দাম চাচ্ছি ৬০ লাখ টাকা। তবে কিছু কমে হলেও বিক্রি করবো।

উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর বৃন্দাবন পশুর হাটের ইজারাদার কফিল উদ্দিন মেম্বার জানান, হাটে এবার দেশি গরুর প্রাধান্যই বেশি। প্রচুর পরিমাণ গরুও উঠেছে। আজ ও কাল আবহাওয়া ভালো থাকলে হাটে পশুর বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে বাড়বে।

খিলগাঁও রেলওয়ে কলোনী সংলগ্ন পশুর হাটেও বিভিন্ন সাইজের প্রচুর গরু-ছাগল এসেছে। এখানেও কেনাবেচা বেশ জমে উঠেছে। এই হাটের উজারাদার হামিদুল হক (শামিম) জানান, গত দুইদিন খুব একটা বেচাকেনা হয়নি। ক্রেতা-বিক্রেতা ও বেপারিরা একটু বুঝেশুনে নিয়েছেন। আজ সকাল থেকে বেচাকেনার ধুম লেগেছে, আগামীকালও ভালো বিক্রির আশা করছেন তিনি।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ ৯টি হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ১১টি হাট বসেছে। তবে এ বছর আদালতের নির্দেশনার কারণে আফতাবনগরে হাট বসেনি ।

ঢাকা উত্তরে অস্থায়ী ৮টি হাটের মধ্যে রয়েছে- উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারার সুতিভোলা খালের কাছের খোলা জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা স্লুইচগেট পর্যন্ত খালি জায়গা ও দক্ষিণখানের জামুন এলাকার খালি জায়গা।

ঢাকা দক্ষিণে অস্থায়ী ১০টি হাটের মধ্যে রয়েছে- খিলগাঁও রেলগেট মৈত্রী সংঘ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা,পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা,বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা,লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন খালি জায়গা,কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগে রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৬:২০   ৫৭ বার পঠিত