আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগ থেকে সরে গেছে-তারা আজ রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ৭৫ বছরের পথ চলায় দলটি নিশ্চিহ্ন করতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে দল ছেড়েছেন ও বেঈমানিও করেছেন; তারা রাজনীতি থেকে হারিয়েও গেছেন। এটাই রাজনীতির শিক্ষা।
সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন,
জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে ভাগ করেছিলেন। ভেবেছিলেন এ দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া যাবে। কিন্ত পারেননি তিনি। কারণ জনগণ সাথে ছিল আর হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। তিনি দ্বায়িত্ব গ্রহণ করার পর বঙ্গবন্ধুহীন দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাবাহীন সংকটাপূর্ণ সংসারকে মায়ের মমতায় কর্মীদেরকে আগলে রেখেছেন তিনি। ২১ বছর ধরে আমাদের শুনতে হয়েছে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় যাবে না। তিনি পরপর চার বার দলকে ক্ষমতায় নিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা পুনরুদ্ধার হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার দল নয়, কর্মীদের দল। অন্য দলের সঙ্গে পার্থক্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ চর্চা আছে। বিএনপিসহ অন্য দলের যে যোগ্যতা নেই। এটাই আওয়ামী লীগের সৌন্দর্য। শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আগলে রাখেন। যে কারণে সকল সংকটে তারা দলের পাশে থাকেন। যারা আওয়ামী লীগ থেকে সরেছে-তারা আজ রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ৭৫ বছরের পথ চলায় দলটি নিশ্চিহ্ন করতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে দল ছেড়েছেন ও বেঈমানিও করেছেন; তারা রাজনীতি থেকে হারিয়েও গেছেন। এটাই রাজনীতির শিক্ষা।
আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন,
এবছর দুবার আমরা ভারত সফরে গিয়েছি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। বিভিন্ন দেশের সরকার প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্টেজ থেকে ঘোষণা হচ্ছিল লংগেস্ট সার্ভিস প্রোভাইডার লেডি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। যে কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যখন উপস্থিত হওয়া হয়, সবার আকর্ষণে থাকেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কাছে যেমন শেখার আছে, শেখ হাসিনার কাছেও অনেকের শেখার আছে। বিশ্ব সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। টালমাটাল পৃথিবী, সেই পরিস্থিতিতেও আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছি। ইউরোপে পণ্যের সংকট হলেও আমাদের দেশে হয়নি। এটি তার কারণেই সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন,
যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, তাদের দলেই গণতন্ত্র নেই। নির্বাচনের পর সরকার হঠানোর পরিকল্পনা নস্যাত হয়েছে তাদের। বিএনপির বেলুন ফিউজ হয়ে গেছে। যে কারণে এক রাতেই কলমের খোঁচায় নেতা-কর্মীর পদ-পদবী আলাদা হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের প্রতি তিন বছর পর পর সম্মেলন হয়। কলমের খোঁচায় কাউকে বাদ অথবা পদ দেয়া হয় না।
একটি বিশেষ মহল বিএনপির সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে কিছু সংবাদমাধ্যমও লিপ্ত। তদন্তের আগে কাউকে অপরাধী বলা নৈতিক নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যেন সংবাদ প্রকাশ না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকা উচিত। কেউ যেন ইনোসেন্ট ভিক্টিম না হয়।
সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার পরিচালনায়, সংগঠনের সহ-সভাপতি ডা.অরুপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি মোবারক আলী শিকদার। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৮:১৬ ৮৬ বার পঠিত