সফটওয়্যার প্রস্তুত না করেই বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) ‘স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড’ উদ্বোধন করেন বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিন। আর পণ্য কিনতে এসে নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের। ডিলারদের অভিযোগ, তড়িঘড়ি করে চালু করা হলেও তথ্য আপডেট না করায় কাজ করছে না সফটওয়্যার।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর বনানীর আনসার ক্যাম্প মাঠে টিসিবির জুলাই মাসের বিক্রির উদ্বোধনে এসে স্মার্ট কার্ড উদ্বোধন করেন বাণিজ্য সচিব। অথচ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি সফটওয়্যার। তাই প্রযুক্তিগত বিপত্তিতে এ সময় বন্ধ থাকে বিক্রিও।
ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দেয় টিসিবির ভর্তুকি মূল্যের পণ্য। তবে তা নিয়েও এখন অস্বস্তিতে স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। স্মার্ট কার্ডের উদ্বোধন জেনে পণ্য কিনতে এসে নাজেহাল অবস্থা তাদের। কারণ কাজ করছে না দেড় বছরের চেষ্টার পর, হাতে পাওয়া স্মার্ট কার্ডটি।
ইয়াকুব আলী নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘দেড় বছর চেষ্টা করে কার্ড পাইছি, কিন্তু এখনো কার্ড দিয়ে কিছুই কিনতে পারিনি। বারবার এসে ঘুরে যাচ্ছি। আজ এসে ১ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম, পরে শুনি কার্ড কাজ করছে না। তাই আজও পণ্য না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।’
আসিয়া বেগম নামের আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘৬ মাস ধরে চেষ্টা করেও এই কার্ড দিয়ে কিছুই কিনতে পারিনি। গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অস্থির হয়ে গেছি। এখন বলতেছে কার্ড স্ক্যান নিচ্ছে না। যাদের পুরোনো কার্ড আছে তারা পাচ্ছে, কিন্তু আমরা পাচ্ছি না।’
স্মার্ট কার্ড কাজ না করায় অনেকেই ফিরে যান পণ্য না পেয়ে। আর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর অবশেষে পুরোনো কার্ড দিয়েই শুরু হয় বিক্রি। তবে, এবার পেঁয়াজ ও চিনি না থাকায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। এ বিষয়ে আনিস নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘এই তিনটা পণ্যের জন্য এতো কষ্ট করেছি। কিন্তু এ দিয়ে আমাদের হয় না। ১৫-২০ দিনও যায় না। পেঁয়াজ দিচ্ছে না অনেকদিন হলো।’
এদিকে, ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করার কাজ শেষ করার আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, স্মার্ট কার্ড বিতরণ শেষ হলে সুষ্ঠুভাবে বিক্রির কার্যক্রম চালানো যাবে। এক কোটি কার্ডধারীদের এই সুবিধা দেয়া হলে অন্তত ৫ কোটি মানুষ এর আওতায় আসবে বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্য সচিব আরও বলেন, স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে আজ থেকে পণ্য পাবে উপকার ভোগীরা। চিনি, আলু ও পেঁয়াজ যুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু কিছু পণ্যের দাম ওঠা-নামা করছে, সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি পেঁয়াজ ও আলু আমদানি করার চেষ্টা চলছে এবং এগুলো দ্রুত আনা সম্ভব হবে। এই মুহূর্তে পেঁয়াজ, আলু ও চিনি মজুদ না থাকায় দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে সেগুলোও প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে এবং সম্ভব হলে দেয়া হবে।
এখন থেকে দোকান কিংবা নির্ধারিত স্থায়ী স্থাপনায় বিক্রি কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছে টিসিবি। জুলাই মাসজুড়ে ভোজ্যতেল ২ লিটার, ২ কেজি মশুর ডাল ও ৫ কেজি চাল কিনতে পারবেন কার্ডধারী ক্রেতারা। টিসিবির চালের দাম ধরা হয়েছে কেজি ৩০ টাকা, মশুর ডাল ৬০ টাকা কেজি ও ভোজ্যতেল লিটারে ১০০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৩:৩০ ৬২ বার পঠিত