জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ ভেবেছিল শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন হলেও এটি আর ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ আন্দোলন ছিল না।
এক পর্যায়ে এটি ছাত্র জনতার আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
রবিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান কার্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত পার্টির জরুরি যৌথ সভায় এসব কথা বলেন চুন্নু। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাপার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে।
আন্দোলনরত ছাত্ররা রাজনৈতিক দলগুলোকে সরাসরি পাশে চায়নি বলেই আমরা তাদের সঙ্গে মাঠে ছিলাম না। কিন্তু গেল সংসদ অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি দীর্ঘ ১০ মিনিট কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বক্তৃতা করেন।
জাপা মহাসচিব আরো বলেন, আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী আইন করে কোটা সংস্কারের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সহিংসতার নামে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ধংস হয়েছে।
এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের দায় স্বীকার করে চলে যাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, কোনো মন্ত্রী বা এমপির বাড়িতে তো হামলা হয়নি। সেখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি স্থাপনাগুলো রক্ষায় তাদের কোনো উদ্যোগ ছিল না। আন্দোলনরতদের গ্রেপ্তারের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের শোষণ, বঞ্চনা, গণতন্ত্রহীনতায় মানুষের মধ্যে একটি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনের ওপর অত্যাচার শুরুর পর থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য জনগণও তাদের সঙ্গে নেমে পড়ে। ছাত্রদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন, অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এমন স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন আমরা অতীতে দেখিনি। এমন বর্বর ও নিপিড়নমূলক হত্যাকাণ্ড জাতি কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। যার কারণে এ আন্দোলনে স্কুলছাত্র থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ দেখা যায়।
সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মেজর অব. রানা মো. সোহেল, মো. জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, মো. খলিলুর রহমান খলিল, মেজর অব. সিকদার আনিসুর রহমান, মেজর অব. মো. মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মো. সামছুল হক, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন খান, কাজী আবুল খায়ের, সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪০:৫৬ ৪১ বার পঠিত