কয়েকদিনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি কাটিয়ে কর্মব্যস্ত হতে শুরু করেছে রাজধানী। কারফিউয়ের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। তবে মিরপুরে ইসিবি চত্বরে কিছুটা উত্তেজনা দেখা গেছে। এখনও আতঙ্ক কাটেনি সাধারণ মানুষের মধ্যে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা তাদের।
সোমবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বেশকিছু এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর টানা কয়েকদিনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি কাটিয়ে একটু একটু করে ঘুরে দাড়াচ্ছে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। ভয়াবহ অরাজকতায় ভরা দুঃসহ সব স্মৃতি, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, লুটতরাজ পেছনে ফেলে আবারও ফিরছে কর্মচাঞ্চল্য।
কারফিউ জারির দশম দিনে সকাল থেকেই রাজধানীতে শুরু হয় কর্মজীবী মানুষের ব্যস্ততা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সড়কে বাড়তে থাকে যানবাহনের সংখ্যাও। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় এদিন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, উত্তরা, সাইন্সল্যাবসহ অধিকাংশ ব্যস্ততম মোড়ের দখলে রয়েছে পুলিশের হাতে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, আনসার বাহিনীর সদস্যরাও বজায় রেখেছেন নিজেদের কড়া নিরাপত্তা পাহারা। পাশাপাশি জননিরাপত্তা জোরদার ও সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যান্য দিনের মতো কাজ করতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীকেও।
রাজধানীজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের বাড়তি উপস্থিতি থাকলেও খুব একটা প্রভাব পড়েনি মানুষের জীবনযাত্রায়। বরং অনেকটা নিরাপদে নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজ সারতে দেখা যায় সাধারণ মানুষদের।
রাজধানীর মালিবাগ চত্বরে অফিসগামী এক ব্যক্তি জানান, সড়কের অবস্থা মোটামুটি নিরাপদ আছে। মানুষজনও নিজেকে নিরাপদ রেখে বের হচ্ছেন। আরেকজন বলেন, গাড়ি ভালই চলছে। আগের কয়েকদিন তো গাড়ি চলেনি। এখন চলছে।
বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা বলেন, শিক্ষার্থীরা কিন্তু তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। এখন যারা আসবে, তারা সবাই দুষ্কৃতিকারী। তাদের প্রতিরোধ করতে আমরা আছি। আমরা জনগণের নিরাপত্তা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় যা কিছু দরকার করা হবে।
এদিকে, মিরপুরের ইসিবি চত্বরে দুপুরের দিকে তৈরি হয় কিছুটা উত্তেজনা। পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে একদল তরুণ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলেও অল্প সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
টানা কয়েকদিনের সহিংসতায় হতাহত কিংবা শুধুমাত্র সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতিই নয়, টান পড়েছে মানুষের জীবন-জীবিকায়ও। আর তাই দ্রুতই সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে ফের ঘুরে দাড়াবে দেশ। ফিরবে আগের মতো শান্তি-শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা এমনটাই প্রত্যাশা আপামর মানুষের।
প্রসঙ্গত: চলমান কোটা আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করতে নামানো হয় সেনাবাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৮:৩৪ ৫০ বার পঠিত