আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কোনো হুমকি দেয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশকে দোষারোপ করেছেন তিনি।
বুধবার (২৮ আগস্ট) তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভামঞ্চ থেকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তুলে নেয়ার জন্য আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিইনি। কারণ, ওরা বন্ধুর জন্য আন্দোলন করছেন। দিল্লিতে কিন্তু ওরা ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে দিয়েছিল। এরপর সুপ্রিম কোর্টকে বলে দিতে হয়েছে, চিকিৎসকরা কাজে ফিরলে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। কিন্তু আমি আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না।’
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে মমতার এই বক্তব্য অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মমতা। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আমি কিছু সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল ও ডিজিটাল মিডিয়াতে একটি নোংরা, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চিহ্নিত করেছি। বুধবার আমাদের ছাত্রদের কর্মসূচিতে আমি যে বক্তৃতা করেছিলাম, সে প্রসঙ্গেই রিপোর্টগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।
মমতা বলেন, ‘আমি সবচেয়ে জোরালো ও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের বা তাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি তাদের আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি। তাদের আন্দোলন ন্যায্য। আমি কখনোই তাদের হুমকি দিইনি। কিন্তু কিছু মানুষ আমাকে অভিযুক্ত করছেন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অশান্তি চাই না। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার এবং চক্রান্ত করে যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে আপনি কামড়াবেন না ঠিকই। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি সমর্থন ছিল, আছে, থাকবে। তবে আমি বলব, আপনারা তো মানবিক। সুপ্রিম কোর্টও অনুরোধ করেছে সবাইকে কাজে যোগ দেয়ার জন্য। অনেক গরিব লোক চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছে।’
এদিকে ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোর নাম করে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানয়েছে, মমতার বিরুদ্ধে আইপিসির ১৫২, ১৯২, ১৯৬ এবং ৩৫৩ ধারার অধীনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। অভিযোগের কপি রাষ্ট্রপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এফআইআরের আবেদনে আইনজীবী জিন্দাল বলেন, তৃণমূল ছাত্র শাখার সদস্যদের জনসভায় মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘মনে রাখবেন, আপনি যদি বাংলাকে পোড়ান, আসাম, উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও জ্বলবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার কাঁপিয়ে দেব। এটা স্পষ্ট যে, তার এই বক্তব্য আসলেই উসকানিমূলক ও দেশবিরোধী।’
সূত্র: আনন্দবাজার
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৭:৪১ ৬৩ বার পঠিত