জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের বরাদ্দকৃত বিপুল পরিমাণ চাল বিক্রি করা হয়েছে। এ কাজে তিলকপুর ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও দুজন ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাদেরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) আক্কেলপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অভিযানে তিলকপুর বাজারের একটি গুদামে মজুত করা ৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন সরকারি চাল জব্দ ও দুজনকে আটকের পর ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপির সচিব ও দুই ইউপি সদস্যর সম্পৃক্তার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার সরকারি চাল জব্দ ও দুজনকে আটক করা হয়। তাদের দুজনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ ওই মামলায় দুই জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে আদালতে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুই ব্যক্তি হলেন, রিতুল দাস (৫০) ও সাজেদুর রহমান (৫২)। তারা আক্কেলপুর উপজেলার ভাটকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। জব্দকৃত ৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন চালের বাজার মূল্যে ২ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা বলে র্যাব জানিয়েছে।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রিতুল ও সাজেদুর দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ভাবে হতদরিদ্রদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরনের জন্য বরাদ্দ করা চাল অবৈধভাবে মজুদ করতেন। খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহর করা সরকারি বস্তা পাল্টিয়ে মাছের ফিডের বস্তায় রাখতেন তারা। পরে অধিক লাভের আশায় চালগুলো কালোবাজারে বিক্রি করতেন। অভিযানে ১২৪টি (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব বস্তায় ৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন চাল ছিল। তিলকপুর ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম মাহববুব সজল, ইউপির সচিব মো. সাজেদুল ইসলাম, ইউপির সদস্য মামুনুর রশিদ পিন্টু ও বাদশা আলম হতদরিদ্রদের বিনামুল্যে বিতরণকৃত চাল কালোবাজারি করতে সহযোগিতা করতেন। অন্য আসামিরা চালগুলো রেশমা চাউল মিলের গুদামে মজুদ করে রাখতেন। পরে তারা মজুদ চালগুলো কালোবাজারে বিক্রি করতেন।
র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আসিফ আল রাজেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জব্দকৃত চালসহ আটক দুই ব্যক্তিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও ইউপির দুই সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে তিলকপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মাহবুব সজলের মুঠোফোনে কল করে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। ইউপি সচিব সাজেদুল ইসলাম মুঠোফোনে করা হলে একজন বলেন, আব্বু বাসায় নেই।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নয়ন হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধার করা চালসহ দুইজন আসামিকে থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। আসামিদের শনিবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩০:১২ ৬০ বার পঠিত