শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

ডিবিতে ভাতের হোটেল ও আয়না ঘর আর নয় : রেজাউল করিম

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ডিবিতে ভাতের হোটেল ও আয়না ঘর আর নয় : রেজাউল করিম
শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪



ডিবিতে ভাতের হোটেল ও আয়না ঘর আর নয় : রেজাউল করিম

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা কার্যালয়ে (ডিবি) আর কোন ভাতের হোটেল ও আয়না ঘর থাকবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি)) রেজাউল করিম মল্লিক।
ডিবি প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ‘মিট দ্য প্রেস’ এ নগরবাসীর উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন তিনি।
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ডিবি অফিসের নাম শুনলে আর কেউ আতঙ্কিত হবে না। ডিবিকে শুধু অপরাধীরাই ভয় পাবে। ভুক্তভোগী এবং অসহায়দের ভরসাস্থল হবে ডিবি কার্যালয়।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা অফিসে আর কোন আয়নাঘর থাকবে না। ডিবি’র কলঙ্কিত অধ্যায় শেষ করে সেটিকে পবিত্র করা হচ্ছে। যেখানে মানুষ ন্যায়বিচার পাবে। এখানে কোন নায়ক-নায়িকা বা সেলিব্রেটিদের সময় কাটানোর জায়গা হবে না। থাকবে না কোন ভাতের হোটেল। আসামি যেই-ই হোক না কেন সে ন্যায়বিচার পাবে। গ্রেফতারকৃত আসামিদেরও নির্যাতন করা হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি যতদিন ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করবো- ন্যায়নীতি, পেশাদারিত্ব ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করবো। ডিবিকে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে ডিবি অফিস হবে ভুক্তভোগীদের ভরসাস্থল।’
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ডিবি অফিসে কোন রকম অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। ডিবিতে চৌকস, দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ডিবির কোন সদস্য যদি কোন ধরনের অনৈতিক ও অপেশাদার কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হন, তাদেরকেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না।
পুলিশ-সাংবাদিক সহযোদ্ধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একসাথে কাজ করতে পারলে দেশে অন্যায়-অবিচার-দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে যাবে। ডিবিকে জনগণের আস্থার জায়গা হিসেবে তৈরিতে আমি সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
সবাইকে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, কয়েকদিন পরেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশের মতো ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় এবং পূজা উৎসবে পুলিশের পাশাপাশি ডিবির টিম সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, যেকোন ধরনের চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধী শনাক্তকরণের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বা ডিবি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সম্প্রসারিত হয় ডিবি’র কাজের ব্যাপ্তি। যুগের সাথে সমান্তরাল পথে অপরাধের ধরন যেমন পাল্টিয়েছে, তেমনি অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ডিবি’র সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, প্রচলিত অপরাধের পাশাপাশি কিশোর অপরাধ, অনলাইন জুয়া, সাইবার ক্রাইম, ইকোনোমিক ক্রাইম, সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং ও গুজবসহ নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জকে ডিবি আজ সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সাথে মোকাবিলা করে চলেছে।
তিনি বলেন, বিগত সময়ের উচ্চাভিলাষী ও অপেশাদার কিছু পুলিশ কর্মকর্তা সমগ্র পুলিশ বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। এর ফলে ছাত্র-জনতার আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান এবং বিগত সরকারের পতনকে ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতায় পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ে। এ ধরনের ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মূখীন পুলিশ বাহিনীকে পূর্বে কখনো হতে হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে ডিএমপির ডিবিসহ সকল থানার কার্যক্রম পুরোদমে সচল হয়েছে।
বক্তব্যের শুরুতে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন তিনি। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দানকারী বীর শহিদদের, যাদের আত্মত্যাগে আমরা নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। গণঅভুত্থ্যানে শহিদ ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং একই সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী নিহত পুলিশ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তিনি। তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
‘মিট দ্য প্রেস’ এ ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভুঁইয়া, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) সৈয়দ হারুন অর রশীদ, উপপুলিশ কমিশনারগণসহ গোয়েন্দা বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৬:০৬   ৪৪ বার পঠিত