বঙ্গোপসাগরের নাফ নদী মোহনায় মাছ ধরতে যাওয়া ২০ মাঝিমাল্লাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি। এ সময় ২টি বোট ও ১৩টি নৌকাসহ জাল নিয়ে গেছে তারা। সোমবার বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের অদূরে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘আবারও বাংলাদেশ জল সীমানা থেকে ১৫টি মাছ ধরার নৌকাসহ ২০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যায়। এর আগে মিয়ানমার নৌবাহিনী জেলেদের ধরে নিয়ে গেছিল। এ সময় একজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ সব ঘটনায় জেলে পল্লীদের মধ্য আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজকের ঘটনটি বিজিবিকে অবহিত করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিইদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারসহ ২০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।’
শাহপরী দ্বীপের বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বিকেলে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর মাঝামাঝি নাইক্ষ্যংদিয়ায় ১৫টি নৌকাসহ ২০ জেলে মাছ শিকারে যান। এ সময় মিয়ানমারের আরকান আর্মি অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে নিয়ে যায়। এতে জেলেদের পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তাদের ফেরত আনতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’
এর আগে গত ৬ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ৬টি মাছ ধরার ট্রলারসহ ৫৮ জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। তাদের ৯ অক্টোবর অপহরণ করে সে দেশের নৌবাহিনী। এ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিড বোট থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তাতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে জেলেদের ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু তখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। এ ছাড়া ১৫ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইনে অনুপ্রবেশ করা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা বাংলাদেশি ১৬ জেলেকে ফেরত এনেছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৩:৪৬ ৪১ বার পঠিত