ব্যক্তি বা দল কেন্দ্রিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশভিত্তিক অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক চান ব্যবসায়ীরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর আগে এই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে অ্যামেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। এদিকে ট্রাম্প আমলে চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ আরও কঠোর হলে বাংলাদেশি পোশাক শিল্প মালিকদের কপাল খুলতে পারে বলে মনে করছে নিট শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ)।
‘আমার দৃষ্টিতে, অভিধানে সবচেয়ে সুন্দর শব্দ হচ্ছে ট্যারিফ’ দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে আসতে যাওয়া রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে নির্বাচনী প্রচারণায় ট্যারিফ নিয়ে এ কথা বলেছিলেন। অবশ্য তার প্রথম মেয়াদেই শুরু করেছিলেন বাণিজ্যযুদ্ধ। সেই সময়ে তার মূল লক্ষ্য ছিল চীন। এবার সেই লড়াইয়ের ময়দান পরিসর যে আরও বিস্তৃত করবেন, সেই বিষয়টিও এরই মধ্যে পরিষ্কার করেছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর কর আরোপ করার মতো যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প, এবার তারই বাস্তবায়ন দেখবে বিশ্ব। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ।
ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে কেবল চীন নয়, বরং সব দেশই তার কঠোর বাণিজ্যনীতির আঁচ টের পাবে। যুক্তরাষ্ট্র যেসব পণ্য আমদানি করে, তার ওপর ১০ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে যা হবে ৬০ শতাংশ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি এমনকি ১০০ শতাংশও হতে পারে। ইউরোপীয় পণ্যের ওপরও শুল্ক বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের বাণিজ্যে কী ঘটতে পারে! কেননা, বাংলাদেশের পণ্য রফতানির সবচেয়ে বড় একক বাজার যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে আরও জমে ওঠা চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধে বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের ক্রয়াদেশ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের যে বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে যুক্তরাষ্ট্রের সেটি এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এতে মার্কিন বাজার ধরতে নতুন সুযোগ তৈরি হবে বাংলাদেশের সামনে। তবে এ সম্ভাবনায় বড় বাধা হতে পারে গ্যাস সংকট।
এক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ব্যক্তিকে প্রাধান্য না দিয়ে দেশভিত্তিক নীতি কৌশল হাতে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, নির্বাচনে কে জিতেছে সেটি না দেখে দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। এ জন্য নিতে হবে নতুন নীতি কৌশল।
ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি যেকোনো দিকেই যেতে পারে। তাই শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটার দিকে নজর ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০০:৩৪ ১৫ বার পঠিত