নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এটা আর থামবে না।’ দ্রুতই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে আজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কবে হবে এই প্রশ্ন আপনাদের সবার মনেই আছে। আমাদের মনেও সারাক্ষণ আছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি।
কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। তারপর থেকে নির্বাচন আয়োজন করার সমস্ত দায়িত্ব তাদের ওপর বর্তাবে।
নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হাল নাগাদসহ আরো কিছু কাজ শুরু করে দিতে পারবে যা একটি অবাধ নির্বাচনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রথম বারের মত প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সে লক্ষ্যেও সরকার কাজ করছে।
রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার এই সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার জানিয়ে তিনি নির্বাচন সংস্কার কমিশনসহ গঠিত সব সংস্কার কমিশনকে মতামত ও পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানান। ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনাদের সকল বক্তব্য বিনাদ্বিধায় বলতে থাকুন। সবার মনের কথা তুলে ধরুন। আমার অনুরোধ সংস্কারের কথাটাও একই সঙ্গে বলুন। সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে যাবেন না।
নির্বাচনের কথা বলার সঙ্গে নির্বাচন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের কথাটিও বলুন। সংস্কার হলো জাতির দীর্ঘ মেয়াদি জীবনী শক্তি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা সুযোগ দিলে প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার কাজ শেষ করেই আমরা আপনাদের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন আয়োজন করব। ততো দিন পর্যন্ত আমি আপনাদের ধৈর্য্য ধারণ করার অনুরোধ করবো। আমরা চাইবো, আমরা যেন এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারি যা যুগযুগ ধরে অনুসরণ করা হবে। এর ফলে সাংবাৎসরিক রাজনৈতিক সংকট থেকে আমাদের দেশ রক্ষা পাবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সময়টুকু আমি আপনাদের কাছে চেয়ে নিচ্ছি। নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন।
নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে মন্তব্য করে ড. ইউনূস বলেন, এটা আর থামবে না। কিন্তু যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলি কাজ সেরে ফেলতে হবে। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে সেটা নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা তার জন্য রেল লাইনগুলো বসিয়ে দিতে পারি আর তা হবে রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্যমত্যের মাধ্যমে।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে আলাপ চলতে থাকবে। নির্বাচন ছাড়াও আরো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার ব্যাপারে ঐক্যমত্য গঠনের জন্য অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হতে পারে। দেশবাসীর কাছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আমরা ক্রমাগতভাবে প্রশ্ন তুলতে থাকতে থাকবো কী কী সংস্কার নির্বাচনের আগে আপনারা করে নিতে চান। নির্বাচনের আয়োজন চলাকালীন কিছু সংস্কার হতে পারে। সংস্কারের জন্য নির্বাচনকে কয়েক মাস বিলম্বিতও করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৪:৪০ ১১ বার পঠিত