রাজধানীতে যানজট নিরসনে একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পে, হাজার কোটি টাকা খরচ করেও মেলেনি সুফল। এর অন্যতম কারণ ক্ষমতার অপব্যবহার করে সড়কে যত্রতত্র দখলদারিত্ব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের কঠোর প্রয়োগ না করলে চিত্র বদলাবে না।
দৈনন্দিন কর্মঘণ্টার একটা বড় অংশই রাজধানীবাসীর পার হয় যানজটে। এ যেন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মেনে নিয়েই দিনাতিপাত নগরবাসীর। ট্রাফিক পুলিশ আছেন বটে, তবে তিনিও নিরুপায় বিপুল সংখ্যক গাড়ির চাপ সামলাতে।
সেকেলে গণপরিবহন ব্যবহারে অনীহার কারণে দুই দশকে অস্বাভাবিক হারে ঢাকায় বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা। এতে আবার মরার উপর খাঁড়ার ঘা, সড়ক দখল। কোথাও নির্মান সামগ্রী, কোথাও নানান পণ্যের পসরা সাজিয়ে ব্যবসা আবার কোথাও ট্রাক, বাস কিংবা লেগুনার স্টান্ড।
বাসস্টপে বাস না থামায় সে জায়গাটাও দখলে রাখে ব্যক্তিগত গাড়ি। এতে বাসগুলো থামছে মোড়ে মোড়ে। সেখানেও আবার বাসের সাথে দাঁড়িয়ে থাকে রাইড শেয়ারকারীর মোটরসাইকেল এবং রিকশা। আর তাতে যানজট ভয়াবহ রূপ নেয়। আর এসব দেখার যে কেউ নেই।
এসব থামাতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপেরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. মিজানুর রহমান বলেন, রাস্তা দখল করে বা রাস্তার পাশে কেউ বসতে পারবে না। সবাইকে নিজ নিজ জায়গায় ফেরত যেতে হবে। আমাদের একটু সময় দিতে হবে। সব নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
আর ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার খোন্দকার নাজমুল হাসান দাবি করেন, তারা প্রতিদিন চার পালায় হকার অপসারণ করেন। কিন্তু তারা আবার বসে। তাদের নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় পুরোপুরি হকারমুক্ত করা যাচ্ছে না বলেও জানান ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সরকার যায় সরকার আসে। কিন্তু রাস্তা-ফুটপাত দখল থামেনা। শুধু পরিবর্তন হয় দখলকারীর। এ থেকে মুক্তি পেতে আইন প্রয়োগে কঠোর হওয়ার পরামর্শ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তৌহিদুল হকের।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, যারা নিয়ন্ত্রণ করবেন, তাদের একটি অংশ যদি সমস্যার অংশ হয়ে দাঁড়ায় বা ভাগবাটোয়ারার অংশ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে সমস্যা নির্মূল করা কঠিন। প্রশাসন উচ্ছেদ করছে যারা বসছে তাদের। কিন্তু এর পেছনে যারা লাভের গুড় খাচ্ছে, ভাগবাটোয়ার অংশ নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। গোড়া থেকে উচ্ছেদ করতে না পারলে রাজধানীর সড়ক হকারমুক্ত করা যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৯:২১ ১০ বার পঠিত