বাংলাদেশ খেলাফত ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘ইসকন একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, তাদের রুখে দেওয়া হবে। ওরা আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। অতি দ্রুত ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে, অন্যথায় আলেম সমাজই রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। আর সাধারণ হিন্দুদের নিরাপত্তা আমরা দেব।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মামুনুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের ইসলামী তাওহিদি জনতার ওপর স্টিম রোলার চালিয়েছিল। ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীর ওপর লাখ লাখ গুলি করা হয়েছিল। রাতের আঁধারে নির্যাতন করা হয়।
তবে আলেম সমাজ ক্ষমতায় গেলে শেখ হাসিনার মতো দানব সরকার হবে না।
বাংলাদেশ খেলাফত ইসলামের মহাসচিব বলেন, বিগত সরকার নিজেদের লোকদের বিচার বিভাগ ও প্রশাসন বিভাগে বসিয়েছিল। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের পেটুয়া বাহিনী হিসেবে তৈরি করেছিল। শেখ হাসিনার মতো তার বাবা শেখ মুজিবও খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল, আর এ কারণেই ৭৫-এর সৃষ্টি হয়েছিল।
শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিল বলেই শেষ পর্যন্ত তার দল আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মীদের সঙ্গেও প্রতিশোধ নিয়েছেন। তিনি এ দেশের ব্যাংকগুলোকেও শূন্য করছেন, আজ দেশের মানুষ ব্যাংকে গিয়ে টাকা পায় না। দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আবারও রাজনীতিতে ফেরার করার চেষ্টা করছে।
মামুনুল হক বলেন, ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই ভাইকে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল।
সেই হত্যার সঠিক বিচার হলে চট্টগ্রামের আদালত চত্বরে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটত না।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইসকনের বিরুদ্ধে বারবার কথা বলেছি, সতর্ক করেছি। তবু সরকার সজাগ হয়নি। তাইতো এবার সর্বোচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি। যদি ইসকনকে আদালত নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আলেম সমাজই ইসকনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। তারা ৩০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুর কাজ দেখিয়ে ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এরকম বড় বড় মেগাপ্রকল্প থেকে দুই-তিন গুণ টাকা বাড়িয়ে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এখন ইসকনকে লেলিয়ে দিয়ে দেশে দাঙ্গা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসানো হয়নি। দ্রুত একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই না এদেশের আলেম সমাজ নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাজপথে নামক। তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে অতি দ্রুত নির্বাচন দিন। জনগণ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন।
ফরিদপুর জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা আমজাদ হোসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, মুফতী শারাফত হোসাইন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা সুবহান মাহমুদ, মুফতী মাহমুদ হাসান ফায়েক, মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, খেলাফত মজলিস ফরিদপুরের প্রধান উপদেষ্টা শাইখুল হাদীস আল্লামা শাহ্ আকরাম আলী, শাইখুল হাদীস আল্লামা হেলালুদ্দীন সাহেব ও আল্লামা আবুল হুসাইন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতী আবু নাসির, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আসা খেলাফত মজলিশের নেতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫০:৫১ ২৫ বার পঠিত