জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে রাজনৈতিক শক্তি, ছাত্র ও জনতা— সবার মধ্যে আরও বেশি আলোচনার ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র প্রণয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সর্বদলীয় বৈঠক শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এমন মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে উপস্থিতি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আসিফ নজরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়নের বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতে ইসলাম, বামমঞ্চ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব রাজনৈতিক শক্তি অংশগ্রহণ করে।
‘বৈঠকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়নের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন’ জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘সবাই বলেছেন যে, এই ধরনের একটা ঘোষণাপত্র করার দরকার আছে। তবে, এখানে অনেক সাজেশন আসছে; মোটাদাগে হলো— ঘোষণাপত্রে সবার অবদান উল্লেখ করতে হবে, ধারাবাহিকতা রাখতে হবে।’
‘ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক নেচার বা লিগ্যাল নেচার কী হবে, সেটা স্পষ্ট করতে হবে। বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, এই ঘোষণাপত্র আরও বেশি আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি, ছাত্র ও জনতা— সবার মধ্যে আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে প্রণয়ন করতে হবে। এটার জন্য যত সময় প্রয়োজন নেওয়া যেতে পারে। তবে, এই বিষয়ে যাতে অযথা কালবিলম্ব না হয়, সেই মতামতও দিয়েছেন অনেকে।’
‘সবাই ঐকমত্য হয়েছেন যে, আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই ধরনের ঘোষণাপত্র হওয়া উচিত। সবাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এই প্রক্রিয়ায় আমরা সফল হতে সক্ষম হব।’
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সবাই যেমন একত্রিত হয়ে ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, তেমনি সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ঘোষণাপত্র তৈরি করবে’— বলেন আসিফ নজরুল।
সময়সীমা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের যারা অংশ নিয়েছিল; সবাই বলেছেন যে, ঐকমত্য পোষণ করে সর্বসম্মতিক্রমে একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করতে হবে। এজন্য যত সময় লাগুক, তা যেন নেওয়া হয়। তাড়াহুড়া যেন করা না হয়। অযথা কালক্ষেপণও করা না হয়। এজন্য অনেকে প্রস্তাব করেছেন যে, আলোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হোক। আমরা এই প্রস্তাবগুলো দ্রুত বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে কি না— জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনোরকম দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। শুধুমাত্র কী পদ্ধতিতে করা হবে, এই বিষয়ে বিভিন্ন মতামত আসছে। সব মতামতকে আমরা স্বাগত জানাই। কোথাও আমরা অনৈক্যের সুর দেখিনি। বরং সবাই বলেছেন যে, এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নে যেন সবার মালিকানা থাকে; সেই বিষয়ে মতামত আসছে। এমন মতামতে সবার মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করবে।’
ঘোষণাপত্র নিয়ে আরও আলোচনা হবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলোচনা হতে পারে, কমিটিও হতে পারে। ওনাদের (রাজনৈতিক দল) মতামত নিয়ে খুব দ্রুত একটা কর্মকৌশল ঠিক করা হবে।’
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৬:৫৫ ১১ বার পঠিত