বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রমজানের আমদানি পণ্য খালাসে ধীরগতি, দামে প্রভাব পড়ার শঙ্কা

প্রথম পাতা » কৃষি ও বাণিজ্য » রমজানের আমদানি পণ্য খালাসে ধীরগতি, দামে প্রভাব পড়ার শঙ্কা
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫



রমজানের আমদানি পণ্য খালাসে ধীরগতি, দামে প্রভাব পড়ার শঙ্কা

রমজান ঘিরে কয়েক লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হলেও মাদার ভ্যাসেল থেকে খালাসে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। এ অবস্থায় নদী ও সাগরে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার হওয়া পণ্যবোঝাই লাইটারেজ জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছে নৌপরিবহন অধিদফতর।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) ৪৫ থেকে ৪৭টি মাদার ভ্যাসেল পণ্য খালাসের অপেক্ষায় থাকলেও তার বিপরীতে লাইটারেজ জাহাজ বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৪৭টি। অথচ আমদানি করা পণ্য দ্রুত বাজারে পৌঁছাতে প্রতিদিন ১০০টির বেশি লাইটারেজ জাহাজ প্রয়োজন। কিন্তু নানা জটিলতার মুখে বর্তমানে মারাত্মক লাইটারেজ জাহাজের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

আইভোয়াকের মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ বলেন, বর্তমানে লাইটারেজ জাহাজের মারাত্মক সংকট রয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া।

চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন নৌরুটে চলাচলের জন্য প্রায় দেড় হাজার লাইটারেজ জাহাজ রয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন পণ্য পরিবহনের জন্য সাড়ে পাঁচশ টাকা ভাড়া আদায় করে লাইটারেজ জাহাজ মালিক।

অবশ্য বড় বড় শিল্পগ্রুপগুলোর নিজস্ব লাইটারেজ সিস্টেম রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে থাকা মাদার ভ্যাসেল থেকে প্রথমে পণ্য খালাস করা হয় লাইটারেজ জাহাজে। এরপর লাইটারেজ জাহাজগুলো পণ্য ডেলিভারি দেয় বিভিন্ন নদী বন্দর ও ঘাটে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে লাইটারেজ জাহাজগুলো নদী ও সাগরে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

স্ক্র্যাপ লোহা-সার-কয়লা-সিমেন্ট ক্লিংকার-পাথর ছাড়াও ভোগ্যপণ্য চিনি-চাল-ছোলা-গম-ডাল পরিবহনে ব্যবহার হয় এসব লাইটারেজ জাহাজ। কিন্তু, ভোগ্যপণ্য বোঝাই লাইটারেজ জাহাজগুলো খালাস শেষে ফিরে না আসায় মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাসে ধীরগতি নেমে এসেছে। কে কে শিপিং লাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, জাহাজগুলো দ্রুত খালি করে দিতে হবে। এতে বাঁচবে সময় ও অর্থ।

লাইটারেজ জাহাজ সংকটের কারণে বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেলের অবস্থানের সময় ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হচ্ছে জাহাজগুলোকে। সামুদা শিপিং লাইন্সের চেয়ারম্যান শফিক আহমেদ বলেন, জাহাজগুলো দ্রুত খালি করে দিলে চট্টগ্রাম বন্দরে মাদার ভ্যাসেলগুলোকে ডেমারেজ দিতে হবে না। এতে বাঁচবে বৈদেশিক মুদ্রা।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর প্রভাব পড়ছে জনগণের ওপর। কারণ এই খরচের প্রভাব সরাসরি পণ্যের ওপর গিয়ে পড়ছে।

এ অবস্থায় নদী এবং সাগর পয়েন্টে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় পণ্যবোঝাই লাইটারেজ জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছে নৌ পরিবহন অধিদফতর।

নৌ পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, নৌ পরিবহন অধিদফতর, বিআইডব্লিউটিএ, কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

গভীর সাগরে অবস্থান নিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৪টি লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাসের সক্ষমতা রয়েছে বিদেশি মাদার ভ্যাসেলগুলোর। কিন্তু এখন মাত্র ১টি লাইটারেজে তারা পণ্য বোঝাই করতে পারছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪১:৩৫   ১০ বার পঠিত