বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

ধর্ষণচেষ্টার কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন: পুলিশ

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ধর্ষণচেষ্টার কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন: পুলিশ
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫



ধর্ষণচেষ্টার কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন: পুলিশ

নিজ বাসায় আশ্রয় দেওয়া নারীকে ধর্ষণের চেষ্টার জন্যই খুন হয়েছেন হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। গ্রেপ্তারকৃতরা এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।

তিনি আরও জানান, ৪ দিন আগেই সাইফুর রহমান তার বাসায় আশ্রয় দিয়েছিলেন এক দম্পতিকে। এদের মধ্যে স্ত্রীকে যৌন নিপীড়নের পাশাপাশি স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন সাইফুর। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের ডিসি মো. মুহিদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ১০ মার্চ রাত ২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ১১ মার্চ একটি মামলা করেন।

এর আগে, টাকা-পয়সা রাখার ব্যাগ হারিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় অবস্থায় পড়েন এক দম্পতি। তাদের দুজনেরই বয়স ২৫-এর কম। তাদের অসহায়ত্ব দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। দুজনকে তার বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যান উত্তরখানের ভাড়া বাসায়। চাকরির কথা বলে নিলেও সাইফুর রহমানের উদ্দেশ্য ছিল ওই নারীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর আচরণ’। সুযোগ পেলেই যুবককে বাইরে পাঠিয়ে তার স্ত্রীর স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন সাইফুর রহমান।

গত রোববার রাতে তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টা করলে তার স্বামী প্রতিবাদ করেন, ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সাইফুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান ওই দম্পতি। পরে ১১ মার্চ ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত দম্পতি হলেন, মো. নাজিম হোসেন (২১) ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইলফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহতের ফ্ল্যাট থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বটি, একটি ধারালো চাকু ও রক্ত মাখা জামা-কাপড় এবং বিছানার চাদর উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জব্দ করা হয়।

মামলার এজাহারে নিহতের ভাই উল্লেখ করেন, নিহত সাইফুর উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈত্রিক আড়াই শতক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩-৪ মাস ধরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। যেখানে ঘটনাস্থল তার সামনেই এই জায়গাটি।

গ্রেপ্তার দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে উত্তরার ডিসি মহিদুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ২-৩ দিন আগে কমলাপুর রেলস্টেশনে সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তার মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে সাইফুর তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন দম্পতিকে। একপর্যায়ে সাইফুর রহমান রুপাকে তার ফ্ল্যাটে আটকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের রাতে এক বেডে ছিলেন নিহত সাইফুর রহমান এবং দম্পতি রুপা ও নাজিম।

তিনি আরও বলেন, সে রাতে নাজিম ঘুমিয়ে পড়লে সাইফুর রহমান রূপাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। একপর্যায়ে নাজিম ঘুম থেকে জেগে রান্নাঘর থেকে বটি এনে সাইফুর রহমানকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান।

নিহত সাইফুর রহমানের সঙ্গে তার স্ত্রীর কোনো বিরোধ ছিল কি না, জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, থাকতে পারে। তদন্তের জন্য তার স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তবে সে ধরনের কোনো তথ্য আমরা পাইনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৩:২২   ১২ বার পঠিত