শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছি : আখতার হোসেন

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছি : আখতার হোসেন
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫



সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছি : আখতার হোসেন

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছি। কীভাবে নতুন করে একটি সংবধান পুনর্লিখন করা যায়, গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির বৈঠকের বিরতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, সেটা যেন নিরঙ্কুশ হয় এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যেন শান্তিপূর্ণ হয় সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি।

আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে এজেন্ডা-ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, বিচার এবং সংস্কার দৃশ্যমান করার মধ্যদিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে কিন্তু তার আগে বিচার এবং সংস্কার সরকারকে দৃশ্যমান করতে হবে। এটার জন্য যেটুকু সময় পাওয়া প্রয়োজন, সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে। কোনভাবেই কাজ ব্যাতিরেকে সময় পেতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সংবিধানের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন,দুদক এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের মতো বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে পারিনি। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট কেন অন্তর্ভুক্ত হয়নি সে বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি। আমাদের মতামতগুলো জানাতে চেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে সংবিধানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বরং এখানে প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। তার মধ্য দিয়েই সাংবিধানকিভাবে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলছি এবং বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি। সেই প্রেক্ষাপটে কীভাবে সংবিধান পুনর্লিখন করা যায় এবং গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি।

এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা আজকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসেছি। সেখানে আমাদের অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১২৯টির সঙ্গে একমত হয়েছি। যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলোর বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে। মূলত এখন পর্যন্ত আমরা তিনটি বিষয়ে কথা বলেছি। প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, প্রটেকশন অব সিটিজেন বা নাগরিকদের নিরাপত্তা। আমরা দেখেছি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরঙ্কুশ অধিকার নিশ্চিত হয়নি। সেসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলেছি। দ্বিতীয় বিষয় পিসফুল ট্রানজেকশন অব পাওয়ার বা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। আমরা দেখেছি যখনই রাষ্ট্রের পাওয়ার ট্রানজেকশনের সময় এসেছে তখনই দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর কীভাবে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। যাতে আমাদের অতীতের যেসব দুঃখ স্মৃতি যেগুলো রয়েছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি আর না হয়। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সংসদ স্থিতিশীলতার নাম করে আর্টিকেল ১৭ দিয়ে কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। সেটি নিয়ে কথা হচ্ছে। যেটির মধ্য দিয়ে আমরা একসঙ্গে সংসদে স্থিতিশীলতা, সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা আমাদের সংসদকে কীভাবে আরও বেশি কার্যকর করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় এলডি হলে সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাব নিয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।

এনসিপির পক্ষে ছিলেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসেল।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩১:০৮   ২৬ বার পঠিত